থানকুনি পাতার ঔষধি গুনাগুন ও অপকারিতা


থানকুনি পাতা অতি পরিচিত একটি ভেষজ উদ্ভিদ।এটি বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় যেমন ক্ষেতের ধারে, পুকুরের পাড়ে কিংবা ডোবার পাশে।এই ভেষজ উদ্ভিদের পুষ্টিগুড়ে ভরপুর।আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে থানকুনি পাতা বেশ পরিচত।এই পাতা বিভিন্ন ঔষধ বানানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে।থানকুনি পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই পাতা খেলে রক্তে অক্সিডেন্ট প্রবাহ বাড়ে।
থানকুনি পাতার গুনাগুন
অক্সিজেন প্রবাহ বাড়লে মস্তিষ্ক কার্যকারিতা ফিরে পায়।থানকুনি পাতা ক্ষত সারাতে, আমাশয়,পেটের ব্যথা দূর কর,চর্মরোগ ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে।এই পাতা নিয়মিত খেতে হবে। বেশি খাওয়া যাবেনা বলো না। বেশি খেলে বমি বমি ভাব লাগবে ও পেট গোলাবে এবং মাথাব্যথা হবে।

ভূমিকাঃ

থানকুনি পাতা ব্যবহার করা হয় খাদ্য হিসাবে এবং ঔষধ হিসেবে।শেকরসহ পুরো অংশ হওয়া যায়। ভর্তা, ভাজি,বড়া তৈরির পাশাপাশি এই পাতা দিয়ে সালাত এবং জুস তৈরি করা হয়।থানকুনি পাতা পেট ও মূত্রনালীর সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এই পাতা সেদ্ধ করে নিন। তারপর এই পানি একটি গ্লাসের ছেঁকে নিন।এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে খান।
পেটের আলসার এবং মূত্রনালীর সমস্যা দূর হয়ে যাবে। নিয়মিত এই পানি সকালে পান করুন। হজমে সমস্যা হলে থানকুনি পাতা সিদ্ধ করে এক চিমটি লবণ দিয়ে এই পানি পান করতে হবে। তাহলে হজম শক্তি ঠিক হয়ে যাবে।

থানকুনি পাতার ঔষধি গুনাগুনঃ

থানকুনি পাতার ঔষধি গুনাগুন নিচে আলোচনা করা হলো।

ক্ষত নিরাময় করেঃ

আপনার শরীরের কোন জায়গায় কেটে গেলে। সেখানে থানকুনির পাতা থেঁতো করে লাগিয়ে দিলে রক্ত পড়া বন্ধ হবে এবং ক্ষত জায়গাটি ভালো হয়ে যাবে। এই পাতাটি এন্টিবায়োটিকের মত কাজ করে।

পেট এবং লিভার ভালো রাখেঃ

পেটের এবং লিভারের সমস্যা যারা ভুগছেন তারা নিয়মিত থানকুনির পাতা খেতে পারেন। এই পাতা নিয়মিত খেলে পেট এবং লিভার ভালো থাকবে।

কাশি এবং শ্বাস যন্ত্রের অসুখ সাড়াতে কাজ করেঃ

থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে কাশি সেরে যায় এবং শ্বাসযন্ত্রের অন্যান্য অসুখ সারাতে সাহায্য করে। তুলসী ও গোল মরিচ দিয়ে থানকুনি পাতা খেলে ঠান্ডা ও জ্বর ভালো হয়ে যায়। গলা ব্যথা ও কাশির জন্য থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে সামান্য চিনি মিশিয়ে খেতে হবে। সপ্তাহখানেক ধরে খেলে আপনি অবশ্যই উপকৃত হবেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ

যারা কোষ্ঠকাঠিন্যই ভুগছেন তাদের নিয়মিত থানকুনি পাতা খাওয়ার চেষ্টা করুন। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য থানকুনি পাতা খাওয়ার পরামর্শ দেন। এই পাতা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা চিরতরে দূর হয়ে যাবে।

ঘুম ভালো হয়ঃ

বেশিরভাগ মানুষ শারীরিক ও মানসিক ভাবে অসুস্থ থাকে। এই অসুস্থ থাকার কারণে ঘুম ভালো হয় না।ঘুম ভালো হওয়ার জন্য প্রতিদিন থানকুনি পাতার রস খেতে পারে। এতে স্নায়ু শিথিল থাকে।ঘুমও দারুন হবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ

থানকুনি পাতার রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর করার জন্য থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এটি শিশুকে খাওয়াতে পারে। তাহলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে ।

চুল পড়া কমায়ঃ

অতিরিক্ত চুল পড়লে মানুষ দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। এক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করতে পারে থানকুনি পাতা। থানকুনি পাতার রস দিলে চুল পড়া কমে যায়। আবার ১চামচ শুকনো থানকুনির গুঁড়া দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে মাথায় লাগাতে হবে। তাহলে চুল পড়া কমে যাবেএবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

ত্বকের সতেজতা, আর্দ্রতা ও কমলতায়ঃ

  • থানকুনি পাতায় প্রচুর পরিমাণে এন্ট্রি অক্সিডেন্ট এবং অ্যামাইনো এসিড রয়েছে। থানকুনি পাতার রস ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বকের সতেজতা বাড়ে। প্রানবন্ত রাখে এবং ক্লান্তি ভাব দূর কররে। ব্রণের দাগ দূর করতে থানকুনির নির্যাস দারুন উপকারী।
  • সূর্য রশির কারণে আমাদের ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। এটি ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ায়। ত্বকের বালী রেখা দূর করে।
  • থান কুনির অ্যামাইনো এসিড, বিটা ক্যারোটিন,ফ্যাটি এসিড ত্বকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায়। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এতে ত্বক থাকে কোমল এবং বয়সের ছাপ পড়ে না।

থানকুনি পাতার অপকারিতাঃ

প্রতিটি জিনিসের যেমন উপকারিতা আছে তেমনি অপকারিতা রয়েছে। ক্ষতিকর দিকগুলো নিচে আলোচনা করা হলো-
  • থানকুনি পাতা খেলে যেমন পেটের ব্যথা দূর হয়। তেমনি বেশি খেলে পেটের ব্যথা বেড়ে যায়। তাই আমাদের পরিমাণ মত খাওয়া উচিত।
  • বেশি খেলে মাথা ঘোরাসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • যাদের লিভারের সমস্যা রয়েছে তাদের থানকুনি পাতা খাওয়া যাবে না। এতে শরীরে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিবে।
  • থানকুনি পাতা খেলে অনেকের এলার্জির সমস্যা,খোশ পচড় দেখা দিতে পাড়ে।
  • অপারেশনের পর থানকুনি পাত রুগির না খাওয়াই ভালো।

লেখক এর মন্তব্যঃ

থানকুনি পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। এতে করে রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, মুখের ঘা দূর কর, সর্দি কাশি জ্বরের জন্য উপকারী এবং পেটের অসুখ দূর করে। এজন্য নিয়মিত প্রতিটি মানুষের এক থেকে দুইটি করে থানকুনি পাতা খাওয়া উচিত। এটি খাওয়ার ফলে অনেক রকম সমস্যার সমাধান হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url