ব্যায়াম ছাড়াই ওজন কমানোর উপায়


কম খেলে ওজন কমে এটা অনেকেই মনে করে।এটা আসলে ঠিক নয়।কম খেলে ওজন কমে না বরং মোটা হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা বাড়বে। সময়ের অভাবে ওজন কমাতে ব্যায়াম করতে পারছেন না? আবার বিভিন্ন কারণে ডায়েট করা হচ্ছে না। তাহলে কি আপনি মোটা হয়ে যাবেন একদম না। ডায়েট ও ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমানো সম্ভব।

ব্যায়াম ছাড়াই ওজন কমানো

ভূমিকাঃ

ওজন কমানোর জন্য খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করা যাবে না।অল্প অল্প করে খাওয়া দাওয়া করতে হবে ।খালি পেটে থাকলেও ওজন বেড়ে যায়। এজন্য আমাদের আধা ঘন্টা বা একঘন্টা পর পর কিছু খাবার খেতে হবে। আপনি মনে করছেন জিমে গেলে ওজন কমে যাবে না।

 জিমে যাওয়ার বদলে আপনি ৪০ মিনিট হাঁটতে পারেন।এভাবে আপনার জীবন যাত্রার মান পরিবর্তন করুন।যেটাই খাবে সেটা অল্প পরিমাণে খেতে হবে। অল্প অল্প খেতে খেতে আপনার অভ্যাস হয়ে যাবে। এভাবে আপনি ওজন কমাতে পারবেন।

সহজে ওজন কমাতে মেনে চলুন এই উপায়গুলোঃ

আমরা যদি জীবনধারায় ছোটখাটো পরিবর্তন করি তাহলে একজন ব্যক্তি ডায়েটিং এবং ব্যায়াম ছাড়াই ওজন কমাতে পারে। এজন্য আমাদের এইসব নিয়ম-কানুন অনুসরণ করা প্রয়োজন। তাই ডায়েটিং ছাড়াই ওজন কমানোর কিছু টিপস নিম্নে দেওয়া হল-

বেশি করে জল পান করুনঃ

সুস্থ থাকার জন্য জল পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্যই জলের অপর নাম জীবন। বেশি বেশি জল পান করলে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে এবং ওজনও কমবে। বেশি জল না খেলে আপনার হজম প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে যাবে। যারা বেশি খাবার পছন্দ করে তাদের অবশ্যই খাবারের আগে এক গ্লাস জল খেয়ে নিতে হবে। এতে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুধা অনেক কমে যাবে।

কিভাবে এবং কখন জল পান করবেন
  • আপনি সারাদিন সাত থেকে আট গ্লাস জল পান করতে পারেন।
  • একজন সুস্থ ব্যক্তি সকালে খালি পেটে একটি লেবুর সঙ্গে হালকা উষ্ণ গরম জল মিশিয়ে খেতে পারেন। এর সঙ্গে মধু যোগ করতে পারেন।

চিনি যুক্ত খাবার খাবেন নাঃ

চিনি জাতীয় খাবার আমাদের খাওয়া উচিত নয় ।এতে আপনার ব্লাড সুগার বৃদ্ধি করে দিয়ে থাকে। এজন্য চিনি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে।বাদ দিতে না পারলে, আস্তে আস্তে তিনি খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে। ড্রিকস খাওয়া বাদ দিতে হবে। এতে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে।
  • আপনার যদি পানীয় পান করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনি ফলের জুস খেতে পারেন।

গ্রিন টিঃ

ডায়েট ছাড়া ওজন কমাতে চাইলে গ্রিন টি খেতে পারেন। এই উপাদান আপনার শরীরের মেদ কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন টি সকালে এবং রাত্রে দুই সময় খাওয়া যায়।

ভালোভাবে ঘুমানঃ

ঘুম শরীরের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভালো ঘুম হলে আপনার মন ভালো থাকবে শরীর ভালো থাকবে। কাজে মন বসবে। ঘুম ঠিক না হলে ওজন বেড়ে যায়। প্রতিদিন ছয় থেকে আট ঘন্টা ঘুমাতে হবে ।ঘুমের সঙ্গে সঙ্গে চাপ এড়াতে হবে।

ভালোমতো চিবিয়ে খানঃ

ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে খাবার। তাহলে খাবার সহজে হজম হয়ে যাবে। আবার চিবিয়ে খেলে কম খেতে সাহায্য করবে।আর কম খেলে ওজনও কমবে।

সবজি খেতে হবেঃ

আমাদের খাদ্য তালিকায় মাছ ,মাংস বেশি খাওয়া যাবেনা।অল্প পরিমাণে খেতে হবে।, মাছ-মাংস বাদ দিয়ে খাদ্য তালিকায় সবজি যোগ করতে হবে। সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, প্রোটিন ও মিনারেল রয়েছে। যা খেলে খাবারের পুষ্টি পূরণ করবে।সবজিতে অল্প পরিমাণে ক্যালরি ও ফ্যাট আছে।

কিভাবে এবং কখন খাবেন
  • প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সবুজ শাকসবজি এবং স্যুপ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
  • মটরশুঁটি ও মসুরের ডাল খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে আমিষ রয়েছে। এটি আমিষের অভাব পূরণ করবে।
  • সকাল বা সন্ধ্যায় ফলের জুস করে খেতে পারেন।
  • সালাদ খাদ্য তালিকায় যুক্ত করুন।
  • লেটুসপাতা এবং সবজির সালাদ খেতে পারেন।
  • ফল এবং বাদামও খেতে পারেন।

পরিমিত পরিমাণে খানঃ

খাবার অল্প পরিমাণে খেতে হবে। বেশি করে খাওয়া যাবেনা। এতে করে ওজন বেড়ে যাবে। অল্প পরিমানে খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। অনেক সময় মানুষ খাবার খাওয়ার সময় টিভি দেখে খায় এতে খাওয়ার মনোযোগ থাকে না। তখন সে বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলে। খাওয়ার সময় মনোযোগ দিয়ে খেতে হবে। এতে করে ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে না।

ঘুমানোর কয়েক ঘণ্টা আগে খাবার খানঃ

আমাদের সকলের উচিত ঘুমানোর দুই ঘন্টা আগে খাবার খেয়ে নিতে হবে।ঘুমানোর আগে খাবার খেলে দ্রুত ওজন বেড়ে যায়। এজন্য খাবারের সময়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাতে হালকা খাবার খেতে হবে। যেমন সবজির সাথে দুইটি রুটি খেতে পারে।

সকালের নাস্তা অবশ্যই করুনঃ

ওজন কমানোর জন্য সকালের নাস্তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সকালের নাস্তায় পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। প্রতিদিন সকালে একটি করে ডিম খাবেন। এটি আপনার শরীরের শক্তি যোগায় ,ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
কিছু টিপসঃ
  • ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমান।
  • সকালে এবং সন্ধ্যায় হাঁটতে যান।
  • একেবারে বেশি খাবেন না। বারেবারে খেতে হবেন।
  • খাবারের ছোট প্লেট ব্যবহার করবেন।

শেষ কথাঃ

আজকের এই প্রতিবেদন ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন যে ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমানো যায়।ওজন কমানোর জন্য উপরের এই নিয়মগুলো মেনে চললে অবশ্যই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।তাহলে আপনিও সুস্থ থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url